Monday, July 28, 2014

Akhilbabu-r Dictionary


হরিহরি মিত্র লেনের একচিলতে গলির দোফলতা জমিটাতে দুঘর নিয়ে থাকেন অখিল বাবু। একসময় উত্তর কলকাতার এক বেসরকারি স্কুলে পড়াতেন। কিন্তু কোন ভূত চেপেছিল কে জানে সেই চাকরিটা ছেড়ে এখন বাড়িতে ছাত্র পড়ান। একটা বিশাল বড়  অ্যাকোরিয়ামে মাছকে দানা খাওয়ান।সময় অসময় কিছুর বাধ্যবাধকতা না মেনে ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ান।অখিলবাবুর আর একটি নেশা অবশ্য আছে, ইদানিং তিনি এক নতুন ধরনের বাংলা ডিকশনারির পিছনে পড়েছেন। সারাদিন রাত এক করে সেই অভিধানের শব্দ চয়ন ও সমার্থক শব্দ খুঁজতে খুঁজতেই কেটে যাচ্ছে।

অখিলবাবুর এই প্রয়াসটি যে নিঃসন্দেহে নতুন ও আকর্ষণীও তা নিয়ে পাড়ার লোকজনের কোনও দ্বিধা নেই। কিন্তু আড়ালে তাকে নিয়ে খেঁউড় করতে পিছপা হয় না।"খেঁউড়" কথাটায় যেটা মনে পড়ল, অখিলবাবুর এই অভিধানের আসল আকর্ষণটাই বলে হওয়া ওঠেনি।চলতি ফিরতি বাঙালি যে ভাষায় কথা বলে, অখিলবাবু সেই বাংলা নিয়েই তার অভিধান টি বানাচ্ছেন।রাস্তা ঘাটে যেতে যেতে যখনই কোনো শব্দ শোনেন যা সংসদ অভিধানে জায়গা পায়নি, তাই নিয়ে শুরু করেন বিশ্লেষন। নামও ঠিক করেছেন 'অপ্রচলিত বাংলা অভিধান'। এই তো সেদিন কলতলার মোড়ে কয়েকজন কলেজ পড়ুয়া কে কথা বলতে শুনলেন 
-ক্লাসটা সাল্টে ঠেকে চলে আসবি। বাড়িতে হিটলার টা বড় বেগড়বাই করছে। জলদি কাটতে হবে। - কালো করে রোগা ছেলেটা বলে উঠল ।
- তোর মালটার সাথে কি সব কিছু চুলকে গেছে? - আর একজন ইয়ার্কির ভঙ্গি তে প্রশ্ন ছুড়ল ।

অখিল বাবু কে দেখে ছেলে গুলো একজন আরেকজন কে ইশারা করল। কালো মতন ছেলেটা বলল- অখিল দা ডিকশনারি ঠিক চলছে তো? 
অখিল বাবু হুম করে চলে এলেন দ্রুত হেটে। তার বিয়ে বার তিন চারেক প্রায় পাকা হবার পর ভেঙ্গে গেছিল। তারপর থেকেই এই ছোকরার দল আড়ালে ডিক-শ-নারি বলে মজা নেয়। সে যাই হোক তার অভিধানের জন্যে অনেকগুলো শব্দ আজ সে পেয়েছে। বাড়ি এসে ফটাফট লিখে ফেললেন শব্দ গুলো। 

সাল্টে - পরিসমাপ্তি ।
ঠেক - স্থানীয় এলাকায় বাক্যলাপ করার অস্থায়ী স্থান । 
হিটলার - পরিবার কর্তা ( সাধারণত বাবা) । 
বেগড়বাই - অসুবিধা সৃষ্টি করা । 
কাটা - বিদায় নেওয়া । 
চুলকে যাওয়া - পরিসমাপ্তি । 
মাল - চারিত্রিক বা শারিরিক গঠনগত ভাবে ইতর লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণীয় ব্যক্তি  ।

অখিল বাবু তার অভিধানের সব থেকে বড় শব্দ উৎস মানেন আম জনতা । তাই তিনি সময় পেলেই ঘুরে বেড়ান বাজার মাঠ, রাস্তায়, দুদল লোকের মধ্যে যখন ঝামেলা বাধে তখন অনেক অপ্রচলিত শব্দ পাওয়া যায় ।
পার্কে সাধারন লোকজনের কথা বার্তা ও আরেক প্রধান উৎস । এভাবে অখিল বাবুর অভিধানগিরি ভালই চলছিল। 

এরমধ্যেই ঘটল ঘটনাটা। গনিবাবু এলাকার এক স্বনামধন্য নাগরিক । কলকাতা পুলিসে চাকরি করেন । ঠিক কোন পদে আছেন তা প্রকাশ করেননা কখনই , কিন্তু তার গতিবিধি আর পাঁচটি পুলিশ জনতা থেকে আলাদা। সকালে জগিং পার্কে দেখা হয়ে গেল গনিবাবুর সাথে। অন্যদিন যেমন খোশমেজাজে গল্প করেন, আজ সেই ব্যাপারটা ছিলনা তার মধ্যে । কিছুক্ষণ কথা বলার পর সেটা আন্দাজ করতে পারলেন অখিল বাবু । আপনি আজ কেমন অস্তমিত গনিবাবু , কোনো টেনশন ? - কথাটা জিজ্ঞ্যেস না করে পারলেন না অখিলরঞ্জন । না তেমন কিছু না , এই কাজ নিয়ে তো চাপ থাকেই - কোনও মতে এড়িয়ে যান গনিবাবু ।
এরপর দুকথা পাচকথার মাঝে গনিবাবু নিজেই পাড়লেন কথাটা - আপনি তো মশায় বঙ্গ বিশারদ, দিন না ধাঁধা টা উদ্ধার করে । বেঁচে যাই এ যাত্রা - প্রতাপশালী গনি বাবু বেশ নিরুপায় হয়ে পড়লেন হাবেভাবে । 
খুলেই বলি তাহলে অখিল বাবু -আমাদের পুলিস বিভাগে অনেক সোর্স কাজ করে যারা আমাদের শহরের আনাচে কানাচে ঘট তে থাকা ঘটনার খবর দেয় । বলতে পারেন নিজেদের পকেটের টাকা খরচা করেই এদের পুষতে হয় কিন্তু এদের ছাড়া শহরটাকে বাঁচান যেত না বলতে পারেন । আমাদের একটা বিশ্বস্ত সোর্স ছিল মশায় , সুখেন নাম ছিল ছেলেটার। দমদম চিড়িয়া মোড়ে একটা চা বিড়ির দোকান চালাত ছেলেটা। গতকাল একটা দুর্ঘটনায় ছেলেটা মারা গেছে। কিন্তু আমাদের সবার বিশ্বাস এটা নিছক দুর্ঘটনা না । যাই হোক সেই অনুসন্ধান আমরা করে নেব, কিন্তু আমাদের সমস্যায় ফেলেছে সুখেনের রেখে যাওয়া একটা চিরকুট। ছড়ার ভাষায় কিছু একটা বলতে চেয়েছে ছেলেটা। বেশ রসিক ছিল এমনিতে । চিরকুটটা সেই মজার ছলেই লেখা , আমাদের বিশ্বাস কোনও গোপন খবর রেখে গেছে সুখেন । আমাদের বিশেষ টিম ছড়াটা ডিকোড করার কাজ করছে । এখন অবদি তেমন সুরাহা করা যায়নি। আমাদের ভয় শব্দ ছক ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে না দেরী হয়ে যায় , তাই আমার ইচ্ছে আপনি যদি একবার দেখেন শব্দ ধাঁধা টাকে - এক নিঃশ্বাসে প্রায় শেষ করলেন কথা গুলো গনিবাবু ।

পকেট থেকে একটা সাদা কাগজ লিখা চিরকুট বের করলেন গনি বাবু।


বেদম হয়ে বঙ্কুবাটী
ভাষার হয়ে লম্বা হাটি
শরদ বেলা ঘুঘুর বাসায়
বোতাম গুনে বাঁকা চাঁদ ভাসায়
গ্রহন হলে শতের ভুবু
চুরি বালায় মস্ত বাবু
ছোলা বালা বড্ড তেদর
চমচম খান জামাই আদর

লাইন গুলো পড়ে অখিলবা|বু সহযেই বুঝতে পারলেন যে কোনও সংকেত তো দিব্যি আছেই এবং সুখেন সত্যি বেশ রসিক ছিল। গনিবাবুর থেকে কিছুটা সময় চেয়ে অখিল বাবু তড়িঘড়ি ফিরে এলেন বাড়িতে। 

বাড়ি ফিরে এসে মাছগুলো কে চারা খাওয়াতে খাওয়াতে নিজের মনে আওড়াতে থাকেন ছড়াটাকে । কয়েকবার পড়ার পরই অখিল বাবু ধাঁধার আধারে ডুবে গেলেন । প্রথম লাইনে কোনও স্থান বোঝাতে চেয়েছে সুখেন এই এতটুকু সারমর্ম ই পেয়েছেন । জীবনে সত্যজিত ফেলুদা ও কিরীটীর বাইরে কোনও গোয়েন্দা গল্পের প্রতি তার আকর্ষণ বা পড়ে ওঠবার ফুরসত হয়ে ওঠেনি । আর গোয়েন্দা গিরি বলতে রান্না ঘরে ইঁদুর বাহিনীর স্থায়ী বসতবাড়ি খোজ করা । তাই শুরু করবেন কিভাবে আর কিভাবেই বা খুলবেন শব্দের জাল টা ভাবতে থেকেন । 

বঙ্কুই বা কে আর তার বাটী-ই বা কোথায়? কলকাতার অলিতে গলিতে বঙ্কু থাকে। তাদের পাড়ায় যে বঙ্কু ত্থাকে সে ত দিনের বেলায় পটলার দোকানে বসে থাকে আর রাতে  দু-প্যাকেট দিশি খেয়ে পড়ে থাকে বিহারিবাবু-দের বারান্দায়, তার বাড়ি ই তো নেই। এক কাপ চা বানিয়ে টেলিভিসনে খবরের চ্যানেল ঘোরাতে থাকেন। নিজের মনে এক ইচ্ছা থাকলেও এই ধাধার বাধা অতিক্রম করা যে কঠিন তা বুঝতে পারছেন। তাই আশায় থাকেন যদি পুলিশ কর্তারাই উদ্ধার করে ফেলেন তো নিজেরও মান রক্ষা হয়। কিন্তু খবর বলতেও এক রাজনৈতিক দলের অন্য দলের প্রতি বিষদ্গার আর কয়েকটি দুর্ঘটনা ছাড়া আর রাজ্যের বিশেষ সংবাদ আর কিছুই পাওয়া গেল না।রাজনৈতিক খবরে বাংলাদেশে শহিদ মিনারে ভাষা দিবসের প্রস্তুতি।আনমনে চা খেতে খেতে ভাষা দিবস এর কথটা কয়েকবার কানে যেতেই অখিলবাবু লটারির টিকিট পাওয়ার মত লাফিয়ে উঠলেন।অন্তত একটা লাইনের মানে তিনি পেয়ে গেছেন।বাংলাদেশে আমার সোনার বাংলা গাওয়া হচ্ছে, রবিঠাকুরের এই গানটা তার খুবই প্রিয়।বন্দেমাতরম এর মধ্যে এই দেশাত্মবোধটা বেশি তের পান তিনি। একলা ঘরে উঠে পায়চারী করতে থাকেন তিনি।বঙ্কুবাটী তো বঙ্কিম বাবুর বাটী ও হতে পারে। মানে নৈহাটি!!!!!!!!!!!!!!!!

“বেদম” বলতে কি তাহলে? কলকাতা গাইড টা নিয়ে ঘাঁটতে থাকেন। যদি নৈহাটিতে বঙ্কিম বাবুর বাড়ি নিয়ে কিছু পাওয়া যায়। কলকাতা গাইডে লোকাল ট্রেনের সময় সারণী খুলে বসে পড়েন।ভাবছেন, নৈহাটি টা ঘুরেই আসবেন।ফেলুদাও তো ঘটনাস্থলে চলে যেতেন রহস্য উদ্ধারে। টাইম টেবিল টাতে চোখ বোলাতে গিয়ে তার দমদম নৈহাটি লোকাল টা চোখে পড়ল। তাহলে  “বেদম” কি দমদম? কিন্তু “বে” কেন?দমদমের উল্টো কিছু আছে নাকি? কিচ্ছুক্ষণ ভাবার পর আর সব ট্রেন নির্ঘণ্ট ওলটপালট করে তিনি বেশ আত্মতৃপ্ত হয়ে উদ্ধার করলেন যে সুখেন ডাউন দমদম নৈহাটি বলছে।যাক, দু লাইন সে পেয়ে গেছে।শুরু টা মন্দ হল না, আর নিজের অপর বিশ্বাসটাও বেড়ে গেছে অনেকটা।

অনেক ভাবনা চিন্তা করেও এর বেশি আর এগোতে পারছিলেন না।শেষমেশ ভাবলেন যে এতো নিজের মাথায় চাপ বাড়িয়ে লাভ নেই। এর থেকে একটু বাইরের হাওয়া খেয়ে আসাই মঙ্গলের। ফেলুদা ও চারমিনার ঠোঁটে গুঁজে হাওয়া খেতেন মগজ খোলার জন্য। নিজেকে ইতিমধ্যে এক বিশেষ শ্রেণীর মধ্যে ভাবতে শুরু করেছেন অখিলবাবু।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। কিন্তু শীত তার আগেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে বিদায় নিয়েছে।সারাদিন একটা ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধের দিকে তবু ফুরফুরে হাওয়া দেয়। রাস্তায় বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেকটাই চলে এসেছেন, নিজেও বুঝতে পারেন নি।এরমধ্যে ঝমঝমিয়ে ভুতুড়ে বৃষ্টি নামল। না বেরিয়েছেন ছাতা নিয়ে, যে এই অসময়ের বৃষ্টি থেকে বাঁচবেন। দৌড়ে সামনে অসীমবাবুর বাড়ির  নিচের চাতালে দাঁড়ালেন। অসীমবাবু দেখতে পেয়ে ডেকে নিলেন ভেতরে। এক বিদেশী কম্পিউটার সংস্থায় কাজ করে অসীমবাবু। বাড়ি ভর্তি ইলেক্ট্রনিক গেজেট।বেশ আধুনিক এই ভদ্রলোক।অসীমবাবুর ছেলে বাবুল। টিভি তে গেম খেলছে। আগে নাম শুনলেও, প্লে-ষ্টেশন বস্তুটার দেখা এই পেলেন অখিলবাবু,বেশ আকর্ষণীয়।

কিভাবে বাবুলের নড়াচড়া টিভির পর্দার সাথে মিলেমিশে যাচ্ছে!রিমোট টিপে গুলি আর বোমার আক্রমণে এগিয়ে যাচ্ছে বাবুল, এটা নাকি ' কর্তব্য এর ডাক '। কিন্তু এই রিমোট কন্ট্রোল ব্যাপারটা অখিলবাবুর কাছে পুরো ধাঁদার জালটা খুলে দিল। বোতাম টিপে কোনো স্বয়ংক্রিয় বোমাকে নিয়ন্ত্রন করতে চাইছে কেউ, আর তাতে বহু লোকের জীবননাশ। এতো এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার।একটা ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণ হলে প্রানহানির সংখ্যা গোনাও আয়ত্তে থাকবে না, একি মারাত্মক সত্যির মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন তিনি।নির্দিষ্ট কোন ট্রেনে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটাও বের করা যায়নি। শরদবেলা ফেব্রুয়ারি তে কি করে আসবে?

বাড়ি ফিরে ফ্লাক্সে চা ভরে ক্রমাগত পায়চারি করতে লাগলেন আর বারবার পড়তে লাগলেন ছড়াটাকে। ঘুঘুর বাসাই বা কি? ঘুঘু বলতে একটা পাখির চেহারা মনে আসে আর প্রচলিত বাংলার প্রবচন। "ঘুঘুর বাসা ধানের আড়ত"- ধান তো চাল ও হতে পারে? নিজের মনেই নিজেকে ধুর বোকা বলে উঠলেন তিনি।আরও কিছুক্ষণ পায়চারি করার পর বাকি লাইন গুলোর মানেও তিনি মোটামুটি বের করে ফেললেন।সব অর্থই যে প্রতীকী হবে তা তো নয়।কিন্তু 'শরদবেলা' এখনো অস্পষ্ট। যাই হোক, যতটুকু হয়েছে তাই নিয়েই কাল যাবেন গনিবাবুর কাছে।

অনেক রাত করে ঘুমনোর পর সকালে উঠতেও খানিকটা দেরী হয়ে গেল।ঘরের কিছু কাজ শেষ করে যখন গনিবাবুর কাছে পৌঁছালেন তখন দুপুর হয়ে গেছে। রীতিমতো ঘামে ভেজা শার্টে অখিলবাবুকে দেখে গনিবাবূ চাঁদ পাওয়ার মতো উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়লেন।

-"আরে অখিলবাবু -আসুন আসুন।এই মাথায় রোদ নিয়ে না এসে, আমাকে তলব করলেই পারতেন?আমিই চলে যেতাম আপনার বাড়ি"- গনিবাবু অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। অখিলবাবুর মুখে আচমকাই হাঁসি খেলে যায়ঃ "মাথার ওপর রোদ কখন ওঠে গণীবাবু? দুপুর বারোটা?"- এ ধরণের প্রশ্নে অবাক হয়ে যান গনিবাবু। কিছু সংকেত পেলেন কি আখিলবাবু?গনিবাবুর চেহারায় চিন্তার ছাপ ফুটে ওঠে।
-"বলতে পারেন এ যাত্রায় আপনি আর আপনার শহর হয়তো বেঁচে গেল"। 
-"মানে?" গনিবাবু এখনও চিন্তিত। কি অর্থ ঐ লাইনগুলোর ?আখিলবাবু পকেট থেকে চিরকুটটা হাতে নিয়ে বলা শুরু করলেন-
"বেদম শব্দটাকে দমদম বলতে পারেন আর বঙ্কুবাটী মানে নৈহাটী। 'বে' শব্দটা বোধহয় ডাউন দমদম নৈহাটী লোকাল বোঝাতে ব্যাবহার হয়েছে।যে ঘটনাটা ঘটতে চলেছে তা ভাষা দিবস অর্থাৎ ২১ শে ফ্রেবুয়ারি র দিন। শরে রোদ কে যদি শরদ ভাবি তাহলে স্থান কাল এই ধাধাটার পরিষ্কার হয়ে যায়। বেলা বারটায় চাল যেখানে নিয়ে যাওয়া হবে, মানে নৈহাটী লোকালের ভেন্দর কামরায়। রিমোট কন্ট্রোলের বোতাম যদি ঠিক সময়মত টিপতে পারো তো বাঁকা চাঁদ মানে শতাধিক লোকের চন্দ্রবিন্দু প্রাপ্তি অবশ্যম্ভাবী।"
গনি বাবু হা করে রীতিমতো গিলতে থাকেন।
-আপনি ক ধরনের ছোলা চেনেন?
-গনি বাবু এ সময় এরকম ঠাট্টার জন্য তৈরি ছিলেন না।মনে মনে বিরক্তই হলেন মনে হয়।
-ছোলা তো কাবুলিছোলাও হয়।তাহলে খুঁজে দেখুন কোনো কাবুলিওয়ালা পান কিনা। তাকে ধরতে পারলেই আপনি 'মস্ত বাবু'।
আশা করি আপনার পুরো ধাধার উত্তর পেয়ে গেছেন।এবার এই শহর কে বাঁচানোর দায়িত্ব আপনার - অখিলবাবু যেন এক গুরুদায়িত্ব সম্পন্ন করলেন।
আর শেষ চমচমের মানে?- গনিবাবুর বিস্ময় জিজ্ঞাসা।
অখিলবাবু হাঁসতে হাঁসতে বলেন- যদি ধরতে পারেন জামাই আদর কিভাবে করবেন তা আপনার মর্জি।
-আমার তো ফাটছিল রীতিমতো তার আগেই তো আপনি ফাটিয়ে দিলেন মশাই।
অখিলবাবু এই দুই 'ফাটা'র দুই মানে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান।এতো সমচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ হয়ে গেল!!!





Story composed by +Rajib Chowdhury for Kolom story contest.


Jhaalmuri 

Spread Creativity. Spread Happiness.
http://from-the-jhalmuri-corner.blogspot.in/
mail: thejhaalmurigang@gmail.com

Saturday, July 19, 2014

Humpty Sharma ki Dulhaniya - Movie Review

If you make a film and decide to 'follow' a cult classic in the process, you need to make absolutely sure you make stuff that can hold its own. And if the cult classic is called Dilwale Dulhania Le Jayenge, you better be extra careful. Incorporating escapades in trains, mustard fields, and a Punjabi wedding can hardly match, let alone beat, the original. 

The spirited Kavya ( Alia Bhatt) from Ambala is about to be married to an NRI ( his father's friend's son) and wants a designer lehenga worth 5 lakhs for the wedding. When her father disagrees, she decides to travel to Delhi to meet her uncle and try her luck to earn that money. She stumbles upon Humpty Rakesh Sharma ( Varun Dhawan) , the son of a bookshop owner, who has tied up the uncle ( the professor in a college) to extract good grades in his exam. In spite of themselves, they fall in love, she returns to Ambala to get married to NRI, Humpty follows. Girl's father has him and his friends beaten black and blue; Humpty refuses to budge; Girl requests father to at least give Humpty a chance as a prospective groom. Girl's father has a condition: if Humpty can find a single fault in the NRI guy that makes him unsuitable for Kavya, he would give him his daughter's hand in marriage. 

Predictable, huh ? That is the trap that this film often falls into, in spite of rip-roaringly funny dialogues at times, and some solid performances from the actors. The scene where Humpty professes his love for Kavya to her father stinks of the nineties : 'Agar mujhe ek roti mil jaaye to main adha Kavya ko de dunga aur baaki adha Papa ko' - I mean, grow up! And the scene where Kavya plans to run away in a train is SO DDLJ. 

The first half is funny and interesting, with the crazy antics of HUmpty and his friends, the 'original fake' Manish Malhotra gown, the 'affair' between an older woman and an younger man; the film slogs post-interval, and gets lost in an maze of cliches and predictable situations; the strict father who is worried about his family's honour more than his daughter's life; the naacha-gaana in the Punjabi wedding; the meeting of the lovers on the roof ( so DDLJ, again); the impeccable NRI groom who jogs like an Olympic athlete and cooks like a Michelin chef; the bashing of the goons by the hero to save his girl . Except Samjhawan ki, the songs are forgettable; the choreography repetitive and distracting. 

But the film remains watchable because of the leading actors. Alia Bhatt works her role like a dream; headstrong, emotional, chirpy - she has it all; her dimples are infectious, her expressions immaculate. dancing isn't exactly her strength, but acting definitely is. Here is a star kid who looks all set for a long and eventful innings in Bollywood. Varun Dhawan is entirely believable as the flirty, confused, good-natured Humpty Sharma; the two share a sparkling chemistry in the film, whether they discuss their dreams after two bottles of beer in Humpty's father's shop, or share burnt roti, dal and 'ok-ok' sabzi in a store-room. (Ahem, ahem, don't they look a tad too comfortable between the sheets ?  ). Ashutosh Rana does a brilliant job as the father who believes that his choice would be the best for his daughter, but lets affection take the better of him in the end. Gaurav Pandey and Sahil Vaid impress with their superb comic timing as Humpty's friends Shonty and Poplu. 

Overall, a 6.5/10, though the 0.5 belongs to Alia. Or her speech atop the truck. Watch it if you want to spend a pleasant two-and-a-half hours watching mushy stuff. Or till you hunt out your DDLJ dvd.

Movie review by Anwesha Sengupta

Wednesday, July 16, 2014

Happy Birthday Jhaalmuri


It had all started one year back with a Piece of Heaven.... and then there was no looking back. From a team of two it has grown up to be a family of hundred. Together we have carved a space for ourselves, to express and share our thoughts. And now we have with us in our store a bagfull of jhaalmuris.

Yes. Our Jhaalmuri is one year old. 

I take this opportunity to thank each one of you Jhaalmurians for helping the blog grow. 

A good news- we now have a page on FB https://www.facebook.com/JhaalmuriCorner

Please like share and spread our forum. May Jhaalmuri reach new heights in the years to come.

Please raise your Jhaalmuri cone and toast 


Happy Birthday Jhaalmuri 




Tuesday, July 8, 2014

Bangalored



Santu is 22.
Its a gloomy day today, with humidity running high.

Santu is yet to get placed, now in 3rd year in the Engineering college. He is not one of the topper category guys, but gets decent marks in the semesters.
Sen-da is arranging the board in the bench at Jaga's tea shop. He is coming to Jaga's tea shop since he was a young lad. Now that he has retired, he can't think of any other tea corner. He feels that he would be cheating Jaga if he doesn't come to his shop every day at 430.

The student union in Santu's college is in control of an ultra left political outfit. Suhasini, one of the union leaders, and Santu are having an affair since first year fest. Its quite an uncommon pair, but they are having a steady affair for the last year and a half.
One of the pawn has gone missing since last Wednesday. A red piece from Ludo board is replacing it. Jaga is becoming unmindful with his ages. Sen-da reminds him everyday to keep the pieces together in his cupboard. Still he misplaced the pawn.

Suhasisni hails from Asansol. She stays in the Ladies hostel as its impossible to travel daily to Kolkata to attend the classes. She returns to her place every alternate weekend.
Sen-da went to the local librarian yesterday to learn a few tricks. Dutta is beating him regularly these days. He needs to make some new moves. Dutta must have learnt a few tricks from his son. Sen-da's son doesn't have any interest in the board games.

Santu believes in social justice. So is Suhasini. Some day, they dream to bring in a social change. It won't be in the 70's violent way, but in a peaceful manner.
The local librarian is a jack of all trades, and supposedly a master of chess also. He taught a couple of new moves to Sen-da yesterday. Sen-da is exuding with confidence today.

Santu is in doubts now-a-days about his career. With the dwindling number of companies visiting campus, he is not very sure of getting placed from the campus. Suhasini has got an offer from a Bangalore based software company. The package is quite good.
Sen-da looked up at the sky. The met office has predicted continued heat wave. But Sen-da feels it might rain tonight. Generally his predictions work when it comes to rain.

Santu's options are running out fast. He is not one of the muggers, who can crack the GATE exam, neither has he confidence in his English vocab which he considers a major blocker in attempting for any of the B-schools. If he doesn't get an offer from campus, its going to be tough for him to get one from off-campus.
Today Dutta is getting late. Jaga got Sen-da a cup of tea while he is waiting for his partner. The board is all set with the 31 pieces and the red piece from ludo board.

Santu had sneaked into the Ladies Hostel last night. He wanted to have a long chat with Suhasini. Suhasini's roomie is on vacation as she needed to visit her parents suddenly. They decided to take that chance. But even after talking all over the night, Santu still doesn't have any clue on his next step. Suhasini is insisting Santu to come down to Bangalore and stay for a month or so to search for jobs.
Sen-da started moving his pieces. He started with e4. Today he wants to show off his newly learnt skill. What is the point of learning a trick which you can't show off to others. He is waiting for Dutta to join.


Dutta-da is getting late today. Last night his son told that he would stay at his friend's place. But he has not returned yet. Dutta-da started feeling restless when the boy didn't return by 10AM. Generally he doesn't stay at his friend's place overnight. He called up some of his friends' phone numbers. But none of them knew about his whereabouts. Dutta-da was feeling a bit lost. Someone suggested to lodge a missing diary in the local police station when he didn't return till 1PM. 

Dutta-da is getting really worried now. He was supposed to be in Jaga's tea shop by 5 to play his regular chess with Sen. But Santu has not returned yet.



Story composed by Subhamoy Chakraborti for Kolom

Thursday, July 3, 2014

পরাজয়ের আনন্দ

ক্লাস নাইন এ তে ঢুকে নাম ডাকার আগে অনির্বাণ স্যারএর খেয়াল হল সেকেন্ড বেঞ্চের দেওয়ালের দিকের জায়গাটা আজও খালি। ‘কিরে?আজকেও চাঁদ আসেনি?’ ? ‘না স্যার, চাঁদের বাবা হসপিটালে ভর্তি হয়েছে,তাই ’- উত্তর এল একজন ছাত্রের কাছ থেকে। চাঁদ মানে রূপচাঁদ সরকার ক্লাস নাইনের ফার্স্ট বয়। ক্লাস ফাইভ থেকে ফার্স্ট হয়ে আসা ছাত্রটি এই শ্যামপুকুর বিদ্যাপীঠের বেশিরভাগ ছাত্রের মতই সমাজের পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে এসেছে। দারিদ্রতার সাথে প্রতিদিনের বোঝাপড়ার মাঝে লেখাপড়া যেখানে বিলাসিতা,সেই পরিস্থিতির মাঝখান থেকেও রূপচাঁদ নিজের মেধার জোরে আজ ক্লাসের সেরা ছাত্র।নিজের পড়া ছাড়াও,পাড়ার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সাধ্যমতো পড়াবার চেষ্টা করে ,তাও বিনা পারিশ্রমিকে। স্কুলের ড্রপ আউট ছাত্রদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও অনেক সাহায্য করেছে সে। চিন্তিত অনির্বাণ হেডস্যার কাছে এল চাঁদের ব্যাপারে কথা বলতে।তিনি সবটাই জানেন,বললেন-‘ওর বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে পরিবারটা খুব বিপদের মধ্যে আছে ,চাঁদের মায়ের পক্ষে তো একা এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়’। অনির্বাণ বলল –আমরা স্কুল থেকে ওদের সাহায্য করতে পারিনা; এই ধরুন চিকিৎসার খরচটা যদি’। হেডস্যার বললেন –‘সে স্থানীয় ক্লাববিষয়টা দেখছে, তবে মুশকিল হল,চাঁদের বাবার কিছু হয়ে গেলে,তখন পরিবারটার দায়িত্ব কে নেবে?’   
                          
সমস্ত আশঙ্কা সত্যি করে রূপচাঁদের বাবা মারা গেলেন,চিকিৎসার সেরকম সুযোগ নয়া দিয়েই। হেডস্যার ও স্কুলের অন্যান্য স্যারদের অনেক বোঝানো সত্ত্বেও চাঁদের মা এই শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। গ্রামের বাড়িতে অল্প জমিজমা ও অবিবাহিত কাকার ছোট্ট দোকানের ভরসায়। ঘটনাটা মাত্র মাস দুয়েকের মধ্যে ঘটে যাওয়ায় , অনির্বাণের ধাক্কাটা সামলে উঠতে বেশ খানিকটা সময় লাগলো।গত দু বছরে রূপচাঁদকে অনেক কাছ থেকে দেখেছে সে। তার মেধা,মনের উদারতা, লড়াকু মন অথচ  শান্ত ভদ্র ব্যববহার তাকে মুগ্ধ করে রাখত। শিক্ষক হিসেবে তো বটেই,একজন মানুষ হিসে্বেও চাঁদের বিপদে কিছু করতে না পারার অসহায়তা সে মন থেকে মেনে নিতে চাইছিল না ।তবে সময় সব ক্ষতপুরনের অব্যর্থ ওষুধ। যে ছেলেটি ছিল শ্যামনগর বিদ্যাপীঠের গর্ব এবং হয়ে উঠতে পারত স্কুলের সেরা ছাত্র ,তার সেই সম্ভাবনার ইতি যেন কুঁড়িতেই ফুল ঝরে যাওয়ার মত। এই ঘটনা ভাগ্যের পরিহাস নাকি পরিস্থিতির শিকার এটাই শুধু আলচ্য বিষয় হয়ে রয়ে গেল। একটা প্রানবন্ত,স্বপ্নালু কিশোর মনের মৃত্যু ঘটে গেল নিঃশব্দে।    

এই ঘটনার বছর পনের পরের কথা। এই স্কুল আরও বড় হয়েছে ।প্রতি বছর বেশ কিছু ছাত্র ভাল ফলাফল সহ পাশ করে যায়। নতুন কয়েক জন তরুণ শিক্ষক স্কুলে যোগ দিয়েছেন । তাদের দেখে অনির্বাণ স্যারএর নিজের কর্মজীবনের শুরুর দিকের কথা মনে পড়ে। এদের একজন  পার্থ রায়।সায়েন্সর স্যার , বাড়ি বনগাঁ অঞ্চলে। শান্ত,ভদ্র নিজের মধ্যে থাকা ছেলেটির স্বভাব একটু অন্যরকম। টিচার্স রুমে এককোনে নিজেকে যেন লুকিয়ে রাখে সে,অথচ ক্লাস রুমে ছাত্রদের মাঝে নিজেকে অবারিত করে দেয়।অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ছাত্রদের প্রিয় হয়ে ওঠে সে। আর অদ্ভুত ভাবে সবার কাছে দরিদ্র মেধাবি ছাত্রদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করে। এই নিয়ে অনির্বাণের কাছেও দু বার এসেছে।          
                      
এক শনিবার অটো বন্ধ থাকায় স্টেশন যাওয়ার জন্য একই রিকশ-তে দুজনে উঠে বসে। কথায় কথায় নিজের বাড়ির কথা, আর্থিক কষ্টের সাথে বড়ো হয়ে ওঠার কথা বলতে শুরু করে পার্থ। এরপর বলল -জানেন অনির্বাণদা ,এই স্কুলের সাথে আমি অনেক আগে থেকেই পরিচিত’ ।অবাক হয় অনির্বাণ-‘কিভাবে?তুমি তো এখানকার ছেলে নও’। পার্থ বলে-‘আমি একটা সংস্থার সাথে যুক্ত, সেই সংস্থার উদ্যোক্তা যে মানুষটি,যার অশেষ অবদানের জন্য আজ আমি এখানে পৌছতে পেরেছি।সেই রূপচাঁদ দাদাই বলেছে এই স্কুলের কথা’। অনির্বাণের বিস্ময় ও জিজ্ঞাসার ঝড় সামাল দিতে পার্থ বলে চলল তার রুপদাদার কথা। ‘এখান থেকে চলে যাবার পর ,গ্রামের বাড়িতে কাকার ছোট্ট দোাকানে মন বসতো না রূপচাঁদের। কঠর বাস্তবের চাপে হারিয়ে যাচ্ছিল জানার ইচ্ছেগুলো। হঠাত একদিন গ্রামের হরিসভায় বসাল ছোট্ট স্কুল। সারাদিনে দোকানের রোজগার থেকে গরিব ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা মেটানো, বড় স্কুল বা কলেজে ভরতির টাকা সবরকমের সাহায্য দেওয়ার প্রচেষ্টা ছি্ল।গত দশ বছরে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছে ‘ঠিকানা’ নামের সংস্থা যারা গরিব ছেলেমেয়েদের পাশে থাকার চেষ্টা করে।আপনি হবেন এর সদস্য?এখন জেলাসদরেও  এই নাম পরিচিত’।ল্পজ্জা নাকি গর্ব ঠইক কিসের যে অনুভুতি অনির্বাণকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল।বঞ্চিত হয়েই সে বুঝেছে বঞ্চনার জ্বালা।যে কাজ তিনি নিজে পারেননি,তার থেকেও বড়ো কাজ করে হারিয়ে দিয়েছে তাঁকে।নিজের ছাত্রের কাছে এই পরাজয় যে তার গর্বের বিষয় সেই উপলব্ধিতেই চোখ থেকে নেমে এল আনন্দাশ্রু।




Story composed by Anindita Das for Kolom
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...