Thursday, December 19, 2013

Tajpur - The pristine beach

রোজের একঘেয়ে কাজের বেড়াজাল টোপকে খোলা আকাশের নীচে মুক্তির শ্বাস নেবো ঠিক করলাম  ঝট কোরে নেওয়া সিদ্ধান্ত। তাই ছোট্ট ছুটির ফাঁকে মানে সপ্তাহান্তের ছুটিতেই আমাদের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিলাম তাজপুরকে।বাঙলার ভ্রমণ  মানচিত্রে তুলনামূলক নতুন দিশা ।                                                              
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তদারকিতেই, তাজপুর , শীতের ছুটির পর্যটকদের জন্য সেজে উঠছে ।দিঘা যাওয়ার মূল রাস্তায় বালিসাই মোড় থেকে তাজপুরের  রাস্তা বেঁকে গেছে ।দুইধারে মাছের ভেড়ীর মাঝে উঁচু বাঁধের ওপর সদ্য পিচ ঢালা মসৃণ একটাই রাস্তা চলে গেছে এঁকে বেঁকে তাজপুরের অন্দরে;শেষ হয়েছে সমুদ্রের ধারে মোহনার কাছে 


তাজপুরের প্রায় সমস্ত হোটেল ,রিসোর্ট  এই রাস্তার দুই ধারে গড়ে উঠেছে ।আমরা বেছে নিলাম নিউ সোনার বাংলা রিসোর্টটিকে।রিসোর্টটির প্রধান আকর্ষণ সামনেই বিস্তৃত ঝাউবন।এই ঝাউবনের মধ্যে দিয়ে দশ মিনিট হাঁটলেই তাজপুরের সৈকত ।আমরা রিসোর্টে চেক-ইন করেই দৌড়লাম সমুদ্র-স্নান উপভোগ করার উদ্দেশ্যে।মাঝপথে ঝাউবনের নিস্তব্ধ সৌন্দর্য ক্যামেরা বন্দি করলাম।তখনও জানিনা সৈকতে আমাদের জন্য দুটো চমক অপেক্ষা কড়ছে।  প্রথম চমক সৈকতে আমরা সাতটি মানুষ ছাড়া আর একটিও মানুষ নেই।তবে যারা আছে তাদের দেখেই দ্বিতীয় চমকটা লাগলো। সৈকত ভরে আছে ছোটবড় লাল কাঁকড়ায়।কিছুক্ষণের মধ্যেই সাতটি মানুষ ও সহস্র লাল কাঁকড়ার মধ্যে শুরু হল লুকোচুরি খেলা।মিনিট পাঁচেক পর হতাশ মানুষের দল নিমগ্ন হল সমুদ্র স্নানে।


দলের কনিষ্ঠতম সদস্য টিনটিনের প্রথম সমুদ্রস্নান,তাই সমুদ্রের নোনাজলের ঢেউ প্রাথমিকভাবে ভ্যাবাচ্যাকা বানালেও আনন্দ লাভে দেরি হয়না। দেড় ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ভাবে ঢেউয়ের সাথে লড়াই,খেলা,হুটোপুটি করে রিসোর্টে ফেরার উদ্যোগ নেওয়া হল। এতখানি সময়ের মধ্যেও সৈকতে একটিও মানুষকে দেখতে পেলামনা
রিসোর্টে ফিরে খাওয়া পর্ব সেরে বেরিয়ে পড়লাম তাজপুরের বিখ্যাত সৈকতে সূর্যাস্ত দেখার আশায়।আশা ব্যর্থ হলনা।দেখলাম কিভাবে অস্তগামী সূর্যের কিরনে সৈকত হোয়ে ওঠে স্বর্ণাভ। ধীর অলস পায়ে হাঁটতে থাকলাম মোহনার দিকে।


মোহনার উল্টোদিকে মন্দারমনি।তাজপুর সৈকতের এই অংশটিতেই কয়েকটি চা-জলখাবারের দোকান রয়েছে তাই কিছু মানুষের সমাগম হয়েছে।প্রতিটি দোকানেই কয়েকটি করে দড়ির ঝোলা টাঙ্গানো আছে। সন্ধ্যা নামতেই দূরে মন্দারমনির হোটেলের আলো জ্বলে উঠলো একটা দুটো করে। আলোময় ঝলমলে জগত থেকে অনেক দূরে থাকায় শহুরে ক্লান্তি হল এক নিমেষেই উধাও। ফিরতি পথে লক্ষ্য করলাম এক বিশেষ ব্যবস্থা।একটি নোটিশ বোর্ডে লেখা রয়েছে ‘তাজপুর সৈকতে গাড়ি চালানো নিষেধ ,কারন এখানে লাল কাঁকড়ার বাসস্থান রয়েছে’। বেশিরভাগ উন্নয়নমুখী পর্যটনকেন্দ্রের স্থানীয় পরিবেশ ও প্রাণীর বিনাশ ঘটে থাকে।তাজপুরের ক্ষেত্রে স্থানীয় উন্নয়ন পর্ষদ তাই প্রথম থেকেই দুটি বিষয় সম্পর্কে সতর্ক রয়েছে।সৈকতের ধারে কোন হোটেল ও রাস্তা গড়ে তোলা হয়নি ।  

পরেরদিন সকালে সৈকতে গিয়ে দেখি সমুদ্র সরে গেছে প্রায় ১কিমি দুরে,আর তাই বিস্তৃত বালুতটে চলছে অ্যাডভেংচার স্পোর্টসের ব্যবস্থা ।একটি জীপের পিছনে দড়ির সাথে প্যারাস্যুট যুক্ত করা হচ্ছে যেটা একজন মানুষের দেহে লাগানো থাকছে জীপ সামনে এগোলে মানুষসহ প্যারাস্যুটটি আকাশে উড়ছে ।ফলে কয়েক মুহূর্তের জন্য মানুষ নিজেকে পাখি বলে অনুভব করবে। সত্যিই  অ্যাডভেঞ্চার।বাঙ্গালি নাকি ভীতু জাতি ,কিন্তু এই পাখি হওয়ার বাসনার জন্য যা লম্বা লাইন দেখলাম,তাতে প্রবাদটিকে সত্য বলে মনে হল না । 


ফেরার পথে অনুভব করলাম ধীর উন্নয়ন ও সীমিত পর্যটক সংখ্যা এই সৈকতকে এখনও রেখেছে তরতাজা,আদিম,সুন্দর।তাই ভয়হয় পরের বার এখানে এসে, একি রকম ভাবে পাবো কি তাজপুর সৈকতকে? 



Travelogue by Anindita Das

Monday, December 9, 2013

My Shillong, the queen of Hill Stations


 ---   Debarati Bhattacharjee
        
Yes, it was my home, my abode during the tender years of my life.
 The quiet hill station of Shillong is located in the North Eastern part of India and is the capital of Meghalaya. The British had found here a home away from home and had named the city “Scotland of the East”.
Till 1972, Shillong had been the Head Quarter of undivided Assam. The state of Meghalaya was formed in the year 1972 and Shillong became its capital city. The kings of Tripura had also built their Summer Palaces here. Shillong was fortunate to have hosted noted personalities like Rabindranath Tagore, Swami Vivekananda, Netaji Subhash Chandra Bose and many more.

Jit-Bhumi
Shillong is well connected by NH40 with Guwahati, the nearest railway station. Shillong also has a small airport at Umroi, although it is better to opt for Guwahati airport when visiting the city.
The city of Shillong has a cosmopolitan flavour. Though the majority of population consists of indigenous tribes of Khasi, Jantia and Garo, the city has inhabitants from almost all communities of India who are no less Shillongnites. During the end of the British period and after independence, many government offices were set up in Shillong and people from across India had migrated here for a living and settled here ever since.
The society here is matrilineal. Women run the family and do all sorts of chores which are otherwise done by men elsewhere. Women are much more safe here than the rest of the country.
The winding roads
The essence of Shillong can be felt in its winding roads, valleys of pines, green hills, flowing streams and overall romance. Music lies in the air here. In every nook and corner, a local band can be found singing western music. Shillong is also fondly called as the rock capital of India. One more thing that is in the heart of every person apart from music is football. Every house here boasts of colourful flowers and sparkling window panes. The city is also the seat of premier educational institutions including national institutes.
The winters in Shillong are chilling and the temperature falls down to 2-3 degrees. In the last week of December, the whole city is decked up for Christmas and New Year celebrations. Christmas carols are sung in all places. Santa visits homes and distributes chocolates to the kids. Stars are hung in every verandah and Christmas tree in all sizes sits pretty in the corner of every living room. During winters, the small streams which run down the hillocks are frozen in the morning. In the early morning, the glass panes are covered with mist. The water pipes are frozen and are required to be heated to dissolve the ice. The tap water is icy cold and a huge pan of hot water is always kept on the kitchen heater for use in all the household chores. Of course, now the winters in Shillong are less cold thanks to the menace of deforestation that came with development.
After the winters, springs arrive when small green leaves come up on the barren trees. And winds come with the onset of springs and the weather is so dry during this time that every other person has a red dry cheek. Summers came when the winds subside in the end of March and this is the best time to visit Shillong. In the summers, the temperature remains around 25 degrees and the weather is very comfortable. Rains in Shillong arrive like unforeseen guests. Rains are unpredictable and sometimes last for days and months without stopping. Autumn is brief here and is most celebrated with autumn festivals held everywhere.
Umiam lake
Shillong is just 55 km from Mawsynram, the wettest place on earth. Mawlynnong, the cleanest village in Asia is located 90 km from Shillong. Other places of interest include the Shillong peak, Lady Hydari Park, Ward’s lake, Motphran, Shillong Golf Course etc. Many water falls also add to the beauty of the city viz., Elephant Falls, Beadon-Bishop Falls, Spread Eagle Falls, Sweet Falls, Crinoline Falls etc. Adventure lovers can also find their own interests in various sports.
Shillong occupies a very special place in my heart. I can never detach myself from those flat nosed and red cheeked kids, the old lady in the fish market, the guitarist who plays in the corner of the road, the small stream that used to run down the hill behind my window, the sound of rain on the tin roof, night view of the lit up hills, the drawings I used to make with fingers on the frosted window panes in winter mornings, the first pout of rose in garden, the sunset over Umiam lake, the long walks in the winding roads, the hills where I learned to live and love.
I wind up here and now. The city of Shillong and its surroundings still remain largely unexplored and is a must on your travel list. Come and feel the romance and beauty of the place.
As for me, once a Shillongnite, always a Shillongnite.
KHUBLEI.

Thursday, December 5, 2013

Konya

                             - পৌলমী মুন্সী

রোজ একটু করে জীবন পুড়ে যায়,
রাত নামে নিয়মিত নিয়মে,
আমি আবার মিলিয়ে দেখতে থাকি,
কিভাবে এত অন্ধকার মনে জমে?
অন্ধকার লেগে থাকে পায়ে পায়ে..
যৌবন অন্ধকার নিয়ে আসে..
সমাজ নাকি এগিয়ে গেছে অনেক..
ভগবান সেই শুনেও হাসে.
কন্যা তুই রাত্রে বেরলি কেন?
কন্যা তোর চোখে কেন আগুন জ্বলে?
“মেয়েদের আস্তে কাঁদতে হয়”
পুরুষেরা রোজ চিৎকার করে বলে..
কন্যা তোর শান্ত স্বভাব চাই.
চুল বড় করে রূপ বাড়াতে হবে.
সে রূপ কারও পছন্দ হয়ে গেলে.
খুব সাবধান ! এড়িয়ে যেতে হবে..
কন্যা তুই ভালবাসবি তাকে.
যাকে সমাজ বলবে ঠিক.
সে ভালবাসল কিনা সেটা ‘কপাল’.
মেনে নেওয়া টাই স্বাভাবিক.
রোজ রাত্রে মার-ই না হয় খেলি.
আগেও তো কত অভ্যাস ছিল.
কাঁদতে কাঁদতে রাত নামত সেদিন..
আজ কে না হয় ঘুমও কেড়ে নিল!

Tuesday, December 3, 2013

The Golden trip



Canada এসেছি গত শীতে...এখানে প্রায় ৮ মাস শীত...  আর মাস চারেক গরম...তবে এ গরমের সাথে কলকাতার গরমকে গুলিয়ে ফেলবেন না...তাপমাত্রা ২০-৩০ ডিগ্রীর মধ্যে থাকে...আর বরফের স্তর সরে গিয়ে Canada-র প্রকৃত সৌ্ন্দর্য্য প্রকাশ পায়...আমরা যে শহরে থাকি তার নাম Calgary আর শহরটা Rocky Mountain-র কোল ঘেষে...বেশ কয়েকটা জায়গা ঘোরার পর গরম থাকতে থাকতে শহরের কাছাকাছি দ্রষ্টব্য জায়গাগুলো ঘু্রে দেখার ইচ্ছা আরও বেড়ে গেছিলো...তাই এই মরশুমের শেষ long week-end এ আমরা ৯-১০ জন ঠিক করলাম “Golden”  'লে একটা জায়গা ঘুরে আসবো...এ শহর থেকে ঘন্টা ৫-৬ drive করে জায়গাটায় যেতে হয় ...Rocky Mountain এরই একটা অংশ...চটপট ২টি SUV গাড়ি book  'রে নেওয়া হোল... আর ঠিক করা হোল একটা বাংলোবাড়ি...জামাকাপড়খাবার-দাবার নিয়ে আমরা শনিবার সকাল সকাল রওনা দিলাম Golden এর উদ্দ্যেশ্যে মুখে হাসি আর মনে আনন্দ নিয়ে...


 Dolomite আর limestone দিয়ে তৈরী এই Rocky Mountain...সূর্যের আলোয় কি অপূর্বই না লাগে এই শৈলশিরাকে...রঙীন পাথরের মাঝে মাঝে গাঢ় সবুজ পাইন গাছের সারি...বসন্ত আসন্ন তাই অনেক সবুজ পাতাই বদলে গিয়ে লাল মেরুন হলুদ খইয়েরী হয়ে গেছে...পরিস্কার ঝকঝকে আকাশের গায়ে সাদা মেঘের নানান কারুকাজআকাশের দিকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে রঙীন পাহাড়ের সারি আর এই পাহাড়ের কোল ঘেঁষে পিছ-ঢালা ছিমছাম রাস্তা দিয়ে আমাদের গাড়ি ছুটল Golden র দিকে...পাহাড়ের পাদদেশে মাঝে মাঝে আবার ছোটো বড়ো Lake ...কি অপূর্ব সেই lake-র জলের রং...ঘন নীলসবুজে নীল...পরিষ্কার স্বচ্ছ কাঁচ-এর মত...এ দেশে pollution কম বলে জল বড় স্বচ্ছ...তাতে আকাশের ছায়া পরে মায়াবি এক রঙের সৃষ্টি হয় যা দেখে সকলেরই চোখ জুড়িয়ে যায়...

এরকমই একটা লেকের ধারে গাড়ি থামিয়ে আমাদের মধ্যান্হ-ভোজন সারলাম বাড়ি থেকে আনা খাবার দিয়ে...তারপর আরও ঘন্টা-খানেক ড্রাইভ করার পর পৌছালাম আমাদের গন্তব্যে...সন্ধ্যে নামার মুখে যখন আমাদের book করা কাঠের বাংলোয় আমরা পৌছালামদেখলাম Golden পাহাড় পড়ন্ত সূর্যের
 আলোয় উজ্জ্বল সোনালি বর্ণে বর্ণময়...আর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এই ছোটো উপত্যকায় মূলত পাইন গাছের ঘন জঙ্গল...মাঝে মাঝে কিছু ফাঁকা জমিতে ছোটো বড়ো কাঠের তৈরী বাংলো... এরকমই একটা তিনতালা বাংলোয় আমরা ১০জন খুঁটি গাড়লাম ২দিনের নির্ভেজাল ছুটি কাটাবো ব'লে... সন্ধ্যে পেরিয়ে যখন অন্ধকার নেমে গেলো পুরোপুরিআমরা balcony-তে Barbecue করার তোড়জোড় শুরু করলাম...
তারপর নাচ-গানহইহুল্লুর ক'রে আর ঝলসানো মাংস খেয়ে আমাদের সেই রাত্রিটা ভালই কেটে গেলো...



 পরদিন সকালে ঘুমে থেকে উঠে আমরা জলখাবার খেয়ে আশপাশটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম... পাইনের জঙ্গল দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কাঠ-চেরাই-এর যন্ত্র, ঘোড়ার আস্তাবল, মেঠো রাস্তার পাশে নানাধরনের গাছ, বনফুল, প্রজাপতি, ফড়িং ইত্যাদি দেখতে পেলাম আর অনুভব করলাম পাহাড়ের নিজস্ব নিস্তব্ধতা...
 কিছুখন পর সবাই  ready হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম wolf center আর buffalo center  দেখতে...নেকড়ে আর মোষের আস্তানা দেখতাআমরা আমাদের আস্তানায় যখন পৌছালাম তখন ঘড়ির কাঁটা ৪টের দিকে ঢলে পড়েছে...

মাছের ঝোল-ভাত খেয়ে পেটপুজা করার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পরলাম পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে হাটতে...সুর্যের পড়ন্ত আলোয় Golden পাহাড়ের range তখন আবার সোনালি হয়ে গেছে...আমরা পিচ-ঢালা রাস্তার দুপাশে ফেলে যেতে থাকলাম একের পর এক সবুজ গোচারণ ভূমিগুলোআর তাতে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরে বেড়ানো গরু বা ঘোড়ার দলকে...বেশ কিছুটা হাঁটার পর পৌঁছে গেলাম Golden নদীর ধারে...সাকোর উপর থেকে দেখলাম খরস্রোতা  Golden নদীকে...উজ্জ্বল সবুজাভ নীল জলের Golden নদীর স্রোতের আওয়াজ ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে পাহাড়ের সুগভীর নিস্তব্ধতাকে... পাহাড়ের সোনালী রঙনদীর সব্জে নীল রঙ আর ঘন পাইনের কালচে সবুজ রঙের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলছিলাম...প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে আপনা থেকেই গেয়ে উঠলাম “ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা প্রভু তোমার পানে”...

   সান্ধ্য-ভ্রমণের রেশ নিয়ে যখন বাড়ি ফিরলাম তখন অন্ধকার জাঁকিয়ে বসেছে চারিদিকে... আর তারি মাঝে তোড়জোড় চলছে campfire-এর আমাদের বাংলোর পাশেই খোলা মাঠে ... হাল্কা ঠান্ডার মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে আমরা তার চারিদিকে আরাম কেদারায় বসে হাসি-গানে-কথায় ভরিয়ে নিলাম সন্ধ্যাটাকে... আর মাঝে মাঝে মাথা তুললেই দেখতে পাচ্ছিলাম রাত্রের ঘন কালো আকাশের গায়ে কোটি কোটি ঝকঝকে তারাদের সাম্রাজ্যকে...শহর থেকে দূরে বলে তারারা যেন আরো পরিস্কার, আরো কাছে নেমে এসে বর্ধন করেছিলো আমাদের সভার আলকসজ্জা ...আন্তরিক ভাবে উপভোগ করা ওই মুহূর্তগুলো যেন তারা হয়েই মনের মাঝে গেঁথে যাচ্ছিলো...
 Campfire-এর পর dinner সেরে আমরা সেদিনের মতো শুয়ে পড়লাম...পরদিন খুব সকাল সকাল উঠে  প্রাতঃভ্রমণে বেরোলাম পাহাড়ি রাস্তা ধ'রে...দেখলাম পাহাড় আর মাটির মাঝে ঘন সাদা কুয়াশার স্তর চাদরের মতো ছড়িয়ে আছে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত অবধি...আর তার ঠিক পিছনে পাহাড় আর আকাশ সোনা রোদ মেখে স্বর্ণাভ হয়ে গেছে...মনে হচ্ছিল স্বর্গ যেন মাটিতে নেমে এসেছে...হাত বাড়ালেই পেয়ে যাব স্বর্গের নাগাল...কুয়াশা ঘেরা মায়াবী পরিবেশ থেকে কুয়াশা ভেজা মেঠো রাস্তা ধরে আমরা ফিরে এলাম আমাদের বাংলোর কাছে...আপেল গাছ ছিল বাংলোর পাশেই...সেখানে আপেল কুরিয়ে, আপেল গাছের সামনে ছবি তুলে আমাদের অভিজ্ঞতার যতোটা পারি Camera বন্দি করে আমরা ঢুকলাম আমাদের বাড়িতে, গোছগাছ ক'রে বেরোতে হবে ব'লে...সকাল সকাল স্নান-খাওয়া সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির পথে...বাংলোর মালিক ও তাঁর স্ত্রী পাশেই থাকেন, অত্যন্ত ভালো ও পরিশ্রমী দম্পতি, বলাবাহুল্য...যেভাবে এই দুটো বড়ো বাংলো আর তার পার্শবর্তী জমি-জায়গা নিজেরাই তত্ত্বাবধানে রেখেছেন তা বিস্মইয়কর, উল্লেখ না ক'রে থাকা যায় না...উনাদের বিদায় জানিয়ে আমরা ২দিনের ছুটি কাটিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম...
পথে আবার সেই রঙীন পাহাড়ের সারি আর তুলতুলে সাদা মেঘে ভরা নীলাকাশ দেখতে দেখতে ছুটলাম আমরা... রাস্তায় দুটো বড়ো বড়ো লেক পড়ল...নাম Moraine Lake  আর Lake Louise... যেমন জলের রং তেমনি তার ব্যাপ্তি...পাহাড়ের গায়ে এরকম বড়ো বড়ো Lake এককথায় Canada-র ঐতিহ্য...ছুটি শেষ ভেবে যতটা মনখারাপ হয়েছিলো, Lake গুলো দেখে মনটা ততটাই ভ'রে গেলো...Lake  আর আকাশের     নীল রং চোখে নিয়ে আমরা ফিরে এলাম আমাদের শহর Calgary-তে...ঘড়িতে তখন রাত ৯টা...


Travelogue by Sreyasi Munshi


Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...